ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিষেধাজ্ঞা মৌসুমে মেলেনি সরকারি সহায়তা জেলেদের দুর্বিষহ জীবন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৭
  • ৩৪১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাগর উপকূলীয় জেলা বরগুনা।  এ জেলায় প্রায় হাজারো মানুষ জেলে পেশার সাথে জড়িত।  তবে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মা ইলিশ সংরক্ষণ অবরোধের কারণে সাগরে নামতে পারছে না উপকূলীয় এলাকার জেলেরা।  অবরোধে সরকারের ঘোষণা ছিল প্রত্যেক জেলেকে সহায়তা করবে সরকার, তবে অবরোধের ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো রকম সহায়তা পায়নি জেলে পরিবারগুলো।  তাই তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।  এ সময়টা বেকার হয়ে পড়া জেলেদের দেওয়া

হয় সরকারি সহায়তা।  বিভিন্ন জেলার জেলোর এ সহায়তা পেয়েছেন।  কিন্তু পাননি বরগুনার জেলেরা।  জীবিকার তাগিদে অনেকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে গিয়ে জেল জরিমানার শিকার হচ্ছেন।  নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরতে না পারা ও সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলেরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন দেশের ১৪টি জেলায় জেলেরা।  ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময়ে এসব অঞ্চলের জেলেদের বিশেষ সহায়তা দেওয়া হয়।  তবে বরগুনার জেলেরা বরাবরই এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।  জেলার ছয়টি উপজেলা।
পাথরঘাটা, তালতলীর উপকূলীয় এলাকার জামাল, শফিক, বাদশা, সগির মাঝি, দুলাল, কাশেম, বাদল, নজরুলসহ একাধিক জেলে বলেন, অবরোধের প্রায় শেষ।  এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা করেনি সরকার।  এখন তারা অভাবের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।  এরপর অবরোধ শেষ হলে সরকারি সহায়তা দিয়ে কি করবেন তারা।  তখন তো তারা সাগরে মাছ ধরবেন।  তাই সহায়তা এখন প্রয়োজন।  তালতলীর চামোপাড়া গ্রামের জেলে বাদল হাং বলেন, ‘আমাদের সংসার চলে মাছ ধরে বিক্রি করে।  এখন আমরা ২২ দিন মাছ ধরতে পারব না।  সরকার সহায়তা না করলে কিভাবে চলব।  তাছাড়া এখন আশ্বিন মাস ধার-দেনাও পাওয়া যায় না। ’ পাথরঘাটার এফ বি মানিক ট্রলারের মাঝি শরিফুল ইসলাম বলেন,‘অবরোধ মেনে সাগরে যাচ্ছেন না তারা।  গত বছর জলদস্যুদের কবলে পড়েছিলেন তারা।  চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাদেরকে জলদস্যুদের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনেছিল তাদের পরিবার।  আর এ বছর সাগরে ইলিশ বেশি ধরা পড়েছিল তাই বিগত দিনের ধার দেনা পরিশোধ করে চিন্তা মুক্ত হয়েছিল কিন্তু আবার এই অবরোধে সহায়তা না পেয়ে ধার দেনা করে চলতে হাচ্ছে তাদের। ’ এদিকে অবারোধের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান জানান, ‘চলতি অবরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন।  অবরোধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো জেলেকে মত্স্য আহরণ করতে দেওয়া হবে না।  যদি কেউ মত্স্য আহরণের জন্য নামে তবে তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় আনা হবে। ’তবে সহায়তার ব্যাপারে জেলা মত্স্য কর্মকর্তা ড. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘অবরোধের আগেই জেলেদের জন্য সহায়তা চেয়েছেন তারা।  তবে কবে নাগাদ সহায়তা আসবে সেটা বলা যাচ্ছে না। ’বরগুনায় নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬২১ জন, আর এই নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলের জন্য ৪০ কেজি করে সহায়তা চেয়েছে মত্স্য অধিদপ্তর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নিষেধাজ্ঞা মৌসুমে মেলেনি সরকারি সহায়তা জেলেদের দুর্বিষহ জীবন

আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাগর উপকূলীয় জেলা বরগুনা।  এ জেলায় প্রায় হাজারো মানুষ জেলে পেশার সাথে জড়িত।  তবে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মা ইলিশ সংরক্ষণ অবরোধের কারণে সাগরে নামতে পারছে না উপকূলীয় এলাকার জেলেরা।  অবরোধে সরকারের ঘোষণা ছিল প্রত্যেক জেলেকে সহায়তা করবে সরকার, তবে অবরোধের ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো রকম সহায়তা পায়নি জেলে পরিবারগুলো।  তাই তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।  এ সময়টা বেকার হয়ে পড়া জেলেদের দেওয়া

হয় সরকারি সহায়তা।  বিভিন্ন জেলার জেলোর এ সহায়তা পেয়েছেন।  কিন্তু পাননি বরগুনার জেলেরা।  জীবিকার তাগিদে অনেকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে গিয়ে জেল জরিমানার শিকার হচ্ছেন।  নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরতে না পারা ও সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলেরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন দেশের ১৪টি জেলায় জেলেরা।  ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময়ে এসব অঞ্চলের জেলেদের বিশেষ সহায়তা দেওয়া হয়।  তবে বরগুনার জেলেরা বরাবরই এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।  জেলার ছয়টি উপজেলা।
পাথরঘাটা, তালতলীর উপকূলীয় এলাকার জামাল, শফিক, বাদশা, সগির মাঝি, দুলাল, কাশেম, বাদল, নজরুলসহ একাধিক জেলে বলেন, অবরোধের প্রায় শেষ।  এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা করেনি সরকার।  এখন তারা অভাবের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।  এরপর অবরোধ শেষ হলে সরকারি সহায়তা দিয়ে কি করবেন তারা।  তখন তো তারা সাগরে মাছ ধরবেন।  তাই সহায়তা এখন প্রয়োজন।  তালতলীর চামোপাড়া গ্রামের জেলে বাদল হাং বলেন, ‘আমাদের সংসার চলে মাছ ধরে বিক্রি করে।  এখন আমরা ২২ দিন মাছ ধরতে পারব না।  সরকার সহায়তা না করলে কিভাবে চলব।  তাছাড়া এখন আশ্বিন মাস ধার-দেনাও পাওয়া যায় না। ’ পাথরঘাটার এফ বি মানিক ট্রলারের মাঝি শরিফুল ইসলাম বলেন,‘অবরোধ মেনে সাগরে যাচ্ছেন না তারা।  গত বছর জলদস্যুদের কবলে পড়েছিলেন তারা।  চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাদেরকে জলদস্যুদের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনেছিল তাদের পরিবার।  আর এ বছর সাগরে ইলিশ বেশি ধরা পড়েছিল তাই বিগত দিনের ধার দেনা পরিশোধ করে চিন্তা মুক্ত হয়েছিল কিন্তু আবার এই অবরোধে সহায়তা না পেয়ে ধার দেনা করে চলতে হাচ্ছে তাদের। ’ এদিকে অবারোধের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান জানান, ‘চলতি অবরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন।  অবরোধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো জেলেকে মত্স্য আহরণ করতে দেওয়া হবে না।  যদি কেউ মত্স্য আহরণের জন্য নামে তবে তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় আনা হবে। ’তবে সহায়তার ব্যাপারে জেলা মত্স্য কর্মকর্তা ড. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘অবরোধের আগেই জেলেদের জন্য সহায়তা চেয়েছেন তারা।  তবে কবে নাগাদ সহায়তা আসবে সেটা বলা যাচ্ছে না। ’বরগুনায় নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬২১ জন, আর এই নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলের জন্য ৪০ কেজি করে সহায়তা চেয়েছে মত্স্য অধিদপ্তর।